অন্যান্য হাদিসের কিতাব/গ্রন্থ/বই সমূহ

মুসনাদে আহমদ (১ থেকে ২খণ্ডে)

musnad

Publisher: Islamic Foundation Bangladesh

https://upload.wikimedia.org/wikipedia/en/5/59/Islamic_Foundation_Bangladesh_Logo.jpeg

Agargao, Sher-E-Bangla Nagar, Dhaka 1207
Phone:+880 29115010
Fax: 880-2-9144235
E-mail: info@islamicfoundationbd.org

[বিঃদ্রঃ ডাউনলোড / Download লেখাটির উপর মাউস দিয়ে ক্লিক করলে ডাউনলোড শুরু হবে অথবা ডাউনলোড পেজ এ যাবে ইনশাআল্লাহ ]

বিডি আপলোড ডাউনলোড লিংকঃ-
১ম খন্ডDownload ।। ২য় খন্ডDownload ।।
মিডিয়া ফায়ার ডাউনলোড লিংকঃ-
১ম খন্ডDownload ।। ২য় খন্ডDownload ।।

মুয়াত্তা ইমাম মালেক

Publisher:Islamic Foundation Bangladesh
https://upload.wikimedia.org/wikipedia/en/5/59/Islamic_Foundation_Bangladesh_Logo.jpeg
Agargao, Sher-E-Bangla Nagar, Dhaka 1207
Phone:+880 29115010
Fax: 880-2-9144235
E-mail: info@islamicfoundationbd.org

[বিঃদ্রঃ ডাউনলোড / Download লেখাটির উপর মাউস দিয়ে ক্লিক করলে ডাউনলোড শুরু হবেঅথবা ডাউনলোড পেজ এ যাবে ইনশাআল্লাহ ]

বিডি আপলোড ডাউনলোড লিংকঃ-
১ম খন্ডDownload ।। ২য় খন্ডDownload ।।
মিডিয়া ফায়ার ডাউনলোড লিংকঃ-
১ম খন্ডDownload ।। ২য় খন্ডDownload ।।

 

মিশকাত শরীফ (১-১১ খন্ড একত্রে) – সোলেমানিয়া বুক হাউস সকল খন্ড:

https://bdmumin.files.wordpress.com/2015/01/1420763687-picsay1.jpg
Download

মিশকাতে বর্নিত যঈফ ও জাল হাদীছ সমূহ

03mishkate-bornito-zaif-hadeeth-1-by-muzeffer-bin

Part 1 – Download (1.91 মেগাবাইট)
Part 2 – Download (2.50 মেগাবাইট)

 

সিলসিলাতুল আহাদীসুস সহীহাহ্

যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আলবানী (রহ) এর রচিত “সিলসিলাতুল আহাদীসুস সহীহাহ”-এর সকল হাদীসের পূর্ণাঙ্গ মতনের সংকলন এই বই। সিলসিলাতুল সহীহাহ-এর সূচিপত্রে অধ্যায়গুলো যেভাবে সাজিয়েছেন এখানেও সেভাবে সাজানো হয়েছে। ইলমে হাদীসের অনভিজ্ঞদের জন্য তা পাঠ করা ও চিন্তুা-গবেষণা সহজ করার জন্য দীর্ঘ তাখরীজ বিবর্জিত শুধু হাদীসগুলোর মতন এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এই হাদীসগুলো তাজরীদ করেছেন আবূ উবাইদাহ মাশহুর ইবনু হাসান আল সালমান। এটি একটি উপকারী কিতাব। এটি প্রকাশ করেছ আতিফা পাবলিকেশন্স।
বইটি ডাউনলোড করুন
[বিঃদ্রঃ ডাউনলোড / Download লেখাটির উপর মাউস দিয়ে ক্লিক করলে ডাউনলোড শুরু হবেঅথবা ডাউনলোড পেজ এ যাবে ইনশাআল্লাহ ]
১ম খন্ডDownload (১৪.৭৩ মেগাবাইট)
২য় খন্ডDownload (১৪.৩৭ মেগাবাইট)

তাহক্বীক রিয়াযুস স্বা-লিহীন

https://mohsin00.wordpress.com/wp-content/uploads/2012/05/10fa6-riyad.jpg

বইটির নতুন এই ভার্সনে Interactive Link অ্যাড করা হয়েছে। মানে আপনি যখন সূচীপত্র থেকে কোন বিষয় পড়তে চাবেন, তখন আপনাকে কষ্ট করে বিষয়টা খুঁজতে হবে না। আপনি সুধু বিষয়টির উপর ক্লিক করলেই, আপনাকে সেই বিষয়টি তাৎক্ষণিক দেখানো হবে। আবার বইটির বাম দিকে Bookmark অপশনে ক্লিক করলে, আপনাকে সূচীপত্র দেখাবে। Updated on 2.2.2012.

[বিঃদ্রঃ ডাউনলোড / Download লেখাটির উপর মাউস দিয়ে ক্লিক করলে ডাউনলোড শুরু হবেঅথবা ডাউনলোড পেজ এ যাবে ইনশাআল্লাহ ]
ডাউনলোড/ Download [29.6 MB]
(Right Click On Download and Click Save Link as/Target as)
Download from MediaFire

 

ঈফ ও জাল হাদীছ সিরিজঃ

12540-e0a6afe0a688e0a6ab-e0a693-e0a69ce0a6bee0a6b2-e0a6b9e0a6bee0a6a6e0a780e0a6b8-e0a6b8e0a6bfe0a6b0e0a6bfe0a69c-e0a7a7e0a6ae-e0a696e0a6a31

[বিঃদ্রঃ ডাউনলোড / Download লেখাটির উপর মাউস দিয়ে ক্লিক করলে ডাউনলোড শুরু হবে অথবা ডাউনলোড পেজ এ যাবে ইনশাআল্লাহ ]

১ম খন্ডডাউনলোড  (17.2 মেগাবাইট)
২য় খন্ডডাউনলোড  (19.2 মেগাবাইট)
৩য় খন্ডডাউনলোড  (22.8 মেগাবাইট)
৪র্থ খন্ডডাউনলোড  (17.8 মেগাবাইট)

অথবা –http://islaminonesite.wordpress.com/2011/10/02/silsilah-joifah-wal-mawjuah-jal-o-joif-hadith-part-1-bangla/

 

 জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাতঃ

e0a69ce0a6bee0a6b2-e0a6b9e0a6bee0a6a6e0a780e0a69be0a787e0a6b0-e0a695e0a6ace0a6b2e0a787-e0a6b0e0a6bee0a6b8e0a782e0a6b2e0a781e0a6b2e0a78

[বিঃদ্রঃ ডাউনলোড / Download লেখাটির উপর মাউস দিয়ে ক্লিক করলে ডাউনলোড শুরু হবে অথবা ডাউনলোড পেজ এ যাবে ইনশাআল্লাহ ]

(ডাউনলোড করুন)

 

হাদীস জাল করার সূত্রপাত কখন হলো?

ডঃ মুসতাফা হুসনী আস-সুবায়ী

হিজরী চল্লিশ সন হলো সুন্নাতের অনাবিল বিশুদ্ধতা এবং এর মধ্যে মিথ্যার অনুপ্রবেশ ও জাল হাদীস রচনার একটি চিহ্নিত সীমারেখা। এরপর সুন্নতে চললো সংযোজন; সুন্নতকে করা হলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের হাতিয়ার এবং অভ্যন্তরীন বিচ্ছিন্নতাবাদের মাধ্যম। অর্থাৎ হিজরী চল্লিশ সন পর্যন্ত সুন্নত ছিল পবিত্র। তারপর এ দুর্ঘটনাটি ঘটল তখন, যখন হযরত আলী ( রাঃ ) ও হযরত মুয়াবিয়া ( রাঃ ) এর মধ্যকার বিরোধ যুদ্ধের রূপ পরিগ্রহ করলো। রক্ত ক্ষয় হলো প্রচুর, অনেক লোক প্রাণ হারালো, মুসলমানরা হয়ে পড়লো বিভক্ত বিভিন্ন দলে। বেশিরভাগ লোকই ছিলো হযরত আলী ( রাঃ ) এর পক্ষে মুয়াবিয়া ( রাঃ ) এর বিপক্ষে। তারপর উদ্ভব হলো খারিজীদের। তারা প্রথমে ছিল হযরত আলী ( রাঃ ) এর একান্ত সমর্থক। তারপর তারা তাকে বর্জন করলো এবং দোষারোপ করতে থাকলো হযরত আলী ( রাঃ ) ও মুয়াবিয়া ( রাঃ ) উভয়কে। হযরত আলী ( রাঃ ) এর শাহাদাৎ এবং ও মুয়াবিয়া ( রাঃ ) এর খিলাফত গ্রহণের পর আল-ই-বায়ত খিলাফত তাদের প্রাপ্য বলে দাবী করতে থাকলো। তারা উমাইয়্যা বংশের আনুগত্য স্বীকার করলো না। এ রাজনৈতিক কোন্দলের কারণে মুসলমানগণ বহু বড় বড় ও ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়লো। প্রতিটি দলই নিজ নিজ দলের পক্ষে কুর’আন ও হাদীসকে দাঁড় করাতে চেষ্টা করতে লাগলো।

এটা অতীব সত্য কথা যে , প্রতিটি দল যা দাবী করবে , তার অনুকূলে কুর’আন ও সুন্নত থাকবে না। সুতরাং কোন কোন দল কুর’আনের অর্থকে বাদ দিয়ে বিরূপ বা বিকৃত ব্যাখ্যা শুরু করে দিল। আর সুন্নত যে অর্থ বহন করে , তা গ্রহণ না করে অপর অর্থ গ্রহণ করতে লাগলো। তাদের মধ্যে এমনও কোন কোন দল ছিল , যারা তাদের দলীয় সমর্থনে রাসূলুল্লাহ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ) এর নামে হাদীস বর্ণনা শুরু করলো। তাদের পক্ষে অতি কঠিন ঠেকলো কুর’আনের বেলায় অনুরূপ কিছু করার ; কারণ কুর’আন অতি সুরক্ষিত। মুসলমানদের বক্ষে বক্ষে কুর’আন , মুখে মুখে তিলাওয়াত। এখান থেকেই শুরু হলো জাল হাদীস রচনার আর বিশুদ্ধ হাদীসের সাথে জাল হাদীসের সংমিশ্রণ।

জাল হাদীস রচনাকারীরা প্রথমে যে গুপ্ত পথ রচনা করল , তা হলো বিভিন্ন ব্যক্তির ফযীলত সম্পর্কে । তাদের ইমাম ও দল- উপদলের শীর্ষস্থানীয় লোকদের ফযীলত সম্পর্কে তার বহু জাল হাদীস রচনা করলো । বলা হয়ে থাকে ‘ শিয়ারাই প্রথমে এর সূত্রপাত করলো। ’  ইবনে আবদুল হাদীদ ‘ শরহে নাহজুল বালাগাহ তে অনুরূপ কথা লিখেছেন—“ তোমরা জেনে রেখ , ফযীলত সম্পর্কে যত মিথ্যা হাদীস রচিত হয়েছে , এর মূল হলো শিয়াগণ ।”

ইরাক হলো জাল হাদীস রচনার আড্ডাখানা । হাদীসের ইমামগণও এর প্রতি ইংগিত করেছেন । ইমাম যুহরী ( রঃ ) বলেছেনঃ

“ আমাদের নিকট হতে হাদীস বের হয়ে যেত এক বিঘত তারপর ইরাক হতে ফিরে আসত আমাদের নিকট এক হাত হয়ে ।”

ইমাম মালেক ( রঃ ) বলতেন “ ইরাক হলো জাল হাদীসের টাকশাল । ”

সূত্র: আল ইসলাম বাংলা.ওয়ার্ডপ্রেস.কম।

১. ছালাতের যাবতীয় আহকাম ছহীহ দলীল ভিত্তিক হ’তে হবে।কারণ এটা ইবাদতে তাওক্বীফী যাতে দলীল বিহীন মনগড়া কোন কিছু করার সুযোগ নেই। প্রমাণহীন কোন বিষয় পাওয়া গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে পরিত্যাগ করতে হবে। কত বড় ইমাম, বিদ্বান, পন্ডিত বা ফক্বীহ বলেছেন তা দেখার প্রয়োজন নেই। কারণ প্রমাণহীন কথার কোন মূল্য নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
فَاسْأَلُوْا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لاَ تَعْلَمُوْنَ- بِالْبَيِّنَاتِ وَالزُّبُرِ.
‘সুতরাং তোমরা যদি না জান তাহ’লে স্পষ্ট দলীলসহ আহ’লে যিকিরদের জিজ্ঞেস কর’ (নাহল ৪৩-৪৪)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম সর্বদা দলীলের ভিত্তিতেই মানুষকে আহবান জানাতেন।
ইসলামের ইতিহাসে প্রসিদ্ধ চার ইমামসহ মুহাদ্দিছ ওলামায়ে কেরামও দলীলের ভিত্তিতে মানুষকে আহবান জানিয়েছেন। ইমাম আবু হানীফা (৮০-১৫০হিঃ) বলেন,
لَايَحِلُّ لِأَحَدٍ أَنْ يَّأْخُذَ بِقَوْلِنَا مَا لَمْ يَعْلَمْ مِنْ أَيْنَ أَخَذْنَاهُ.
‘ঐ ব্যক্তির জন্য আমাদের কোন বক্তব্য গ্রহণ করা হালাল নয়, যে জানে না আমরা উহা কোথা থেকে গ্রহণ করেছি’।৭ ইমাম শাফেঈ (১৫০-২০৪হিঃ) বলেন,
إِذَا رَأَيْتَ كَلاَمِيْ يُخَالِفُ الْحَدِيْثَ فَاعْمَلُوْا بِالْحَدِيْثِ وَاضْرِبُوْا بِكَلاَمِيْ الْحَائِطَ.
‘যখন তুমি আমার কোন কথা হাদীছের বরখেলাফ দেখবে, তখন হাদীছের উপর আমল করবে এবং আমার কথাকে দেওয়ালে ছুড়ে মারবে’।৮ ইমাম মালেক (৯৩-১৭৯হিঃ), ইমাম আহমাদ (১৬৪-২৪১হিঃ) সহ অন্যান্য ইমামদের বক্তব্যও একই।
২. জাল ও যঈফ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত সকল প্রকার আমল নিঃসঙ্কোচে নিঃশর্তভাবে বর্জন করতে হবে। কারণ জাল ও যঈফ হাদীছ দ্বারা কোন শারঈ বিধান প্রমাণিত হয় না। জাল হাদীছের উপর আমল করা পরিষ্কার হারাম।১০ সে কারণ ছাহাবায়ে কেরাম যঈফ ও জাল হাদীছের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। আস্থাহীন, ত্রুটিপূর্ণ, অভিযুক্ত, পাপাচারী, ফাসিক শ্রেণীর লোকের বর্ণনা তারা গ্রহণ করতেন না।
প্রসিদ্ধ চার ইমামসহ অন্যান্য মুহাদ্দিছগণও এর বিরুদ্ধে ছিলেন। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর চূড়ান্ত মূলনীতি ছিল যঈফ হাদীছ ছেড়ে কেবল ছহীহ  হাদীছকে অাঁকড়ে ধরা। তাই দ্ব্যর্থহীনভাবে তিনি ঘোষণা করেন,  إِذَا صَحَّ الْحَدِيْثُ فَهُوَ مَذْهَبِيْ ‘যখন হাদীছ ছহীহ হবে সেটাই আমার মাযহাব’।১১ ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহঃ) বলেন,
إِنَّ الْعَالِمَ إِذَا لَمْ يَعْرِفِ الصَّحِيْحَ وَالسَّقِيْمَ وَالنَّاسِخَ والْمَنْسُوْخَ مِنَ الْحَدِيْثِ لاَيُسَمَّى عَالِمًا.
‘নিশ্চয়ই যে আলেম হাদীছের ছহীহ-যঈফ ও নাসিখ-মানসূখ বুঝেন না তাকে আলেম বলা যাবে না’। ইমাম ইসহাক্ব ইবনু রাওয়াহাও একই কথা বলেছেন।১২ ইমাম মালেক, শাফেঈ (রহঃ)-এর বক্তব্যও অনুরূপ।১৩
মুহাদ্দিছ যায়েদ বিন আসলাম বলেন,
مَنْ عَمِلَ بِخَبْرٍ صَحَّ أَنَّهُ كِذْبٌ فَهُوَ مِنْ خَدَمِ الشَّيْطَانِ.
‘হাদীছ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও যে তার উপর আমল করে সে শয়তানের খাদেম’।১৪
অতএব ইমাম হোন আর ফক্বীহ হোন বা অন্য যেই হোন শরী‘আত সম্পর্কে কোন বক্তব্য পেশ করলে তা অবশ্যই ছহীহ দলীলভিত্তিক হ’তে হবে। (এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা দ্রঃ ‘যঈফ ও জাল হাদীছ বর্জনের মূলনীতি’ শীর্ষক বই)
৩. প্রচলিত কোন আমল শারঈ দৃষ্টিকোন থেকে ভুল প্রমাণিত হ’লে সাথে সাথে তা বর্জন করতে হবে এবং সঠিকটা গ্রহণ করতে হবে।এক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র গোঁড়ামী করা যাবে না। পূর্বপুরুষরা এবং বড় বড় আলেমগণ করে গেছেন, এখনো সমাজে চালু আছে, বেশীর ভাগ আলেম বলছেন এ সমস্ত জাহেলী কথা বলা যাবে না।
ভুল হওয়া মানুষের স্বভাবজাত। মানুষ মাত্রই ভুল করবে, কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তবে ভুল করার পর যে সংশোধন করে নেয় সেই সর্বোত্তম। আর যে সংশোধন করে না সে শয়তানের বন্ধু। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,
كُلُّ ابْنِ آدَمَ خَطَّاءٌ وَخَيْرُ الْخَطَّائِيْنَ التَّوَّابُوْنَ
‘প্রত্যেক আদম সন্তান ভুলকারী আর উত্তম ভুলকারী সে-ই যে তওবাকারী’।১৫ সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)ও ভুল করেছেন এবং সংশোধন করে নিয়েছেন।১৬ সাহো সিজদার বিধানও এখান থেকেই চালু হয়েছে। অনুরূপ চার খলীফাসহ অন্যান্য ছাহাবীদেরও ভুল হয়েছে।১৭ তাছাড়া অনেক সময় আল্লাহ তা‘আলা এবং রাসূল (ছাঃ) কোন বিধানকে রহিত করেছেন এবং তার স্থলে অন্যটি চালু করেছেন(বাক্বারাহ ১০৬)। তখন সেটাই সকল ছাহাবী গ্রহণ করেছেন। অতএব বড় বড় আলেমের ভুল হয় না এই ধারণা চরম ভ্রান্তিপূর্ণ। তাই সংশোধনের ক্ষেত্রে কখনো গোঁড়ামী করা যাবে না। কারণ ভুল সংশোধন না করে বাপ-দাদা বা বড় আলেমদের দোহাই দেওয়া অমুসলিমদের স্বভাব (বাক্বারাহ ১৭০; লোকমান ২১)
৪. খুঁটিনাটি বলে কোন সুন্নাতকে অবজ্ঞা করা যাবে না: ইসলামের কোন বিধানই খুঁটিনাটি নয়। অনুরূপ কোন সুন্নাতই ছোট নয়। এ ধরনের ভ্রান্ত আক্বীদা থেকে বেরিয়ে এসে রাসূল (ছাঃ)-এর যেকোন সুন্নাতকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হ’তে হবে। কেননা রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে অবজ্ঞা করা ও খুঁটিনাটি বলে তাচ্ছিল্য করা অমার্জনীয় অপরাধ। সেই সুন্নাত যতই সাধারণ বা হালকা হোক না কেন। রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবীগণ এই অবহেলাকে মুহূর্তের জন্যও বরদাশত করেননি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদা বারা ইবনু আযেব (রাঃ)-কে ঘুমানোর দো‘আ শিক্ষা দিচ্ছিলেন। তার এক অংশে তিনি বলেন, ‘(হে আল্লাহ!) আপনার নবীর প্রতি ঈমান আনলাম যাকে আপনি প্রেরণ করেছেন’। আর বারা (রাঃ) বলেন, ‘এবং আপনার রাসূলের প্রতি ঈমান আনলাম যাকে আপনি প্রেরণ করেছেন’। উক্ত কথা শুনে রাসূল (ছাঃ) তার হাত দ্বারা বারার বুকে আঘাত করে বলেন,  বরং ‘আপনার নবীর প্রতি ঈমান আনলাম যাকে আপনি প্রেরণ করেছেন’।১৮ এখানে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ‘নবীর’ স্থানে ‘রাসূল’ শব্দটিকে বরদাশত করলেন না।
জনৈক ছাহাবী ছালাতের মধ্যে সামান্যতম ত্রুটি করলে তিনি তাকে ডেকে বলেন, হে অমুক! তুমি কি আল্লাহকে ভয় কর না। তুমি কি দেখ না কিভাবে ছালাত আদায় করছ?১৯
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) একদিন ছালাতের জন্য তাকবীরে তাহরীমা বলতে শুরু করেছেন। এমতাবস্থায় দেখতে পেলেন যে, এক ব্যক্তির বুক কাতার থেকে সম্মুখে একটু বেড়ে গেছে তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর বান্দারা! হয় তোমরা কাতার সোজা করবে না হয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের চেহারা সমূহকে ভিন্নরূপ করে দিবেন’।২০
নবী (ছাঃ) একদা এক ব্যক্তিকে ডান হাতের উপর বাম হাত রেখে ছালাত আদায় করতে দেখে তিনি ডান হাতটাকে বাম হাতের উপর করে দেন।২১
অতএব ছালাতের যেকোন আহকামকে খুঁটিনাটি বলে অবজ্ঞা করা যাবে না। বরং সেগুলো পালনে বাহ্যিকভাবে যেমন নানাবিধ উপকার রয়েছে তেমনি অঢেল নেকীও রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের পিছনে রয়েছে ধৈর্যের যুগ। সে সময় যে ব্যক্তি সুন্নাতকে শক্ত করে অাঁকড়ে ধরে থাকবে সে তোমাদের সময়ের ৫০ জন শহীদের নেকী পাবে’।২২ বর্তমানে যুগের প্রত্যেক সুন্নাতের পাবন্দ ব্যক্তির জন্যই এই সুসংবাদ।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘যে ব্যক্তি (কাতারের মধ্যে দু’জনের) ফাঁক বন্ধ করবে আল্লাহ তা‘আলা এর দ্বারা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দিবেন এবং তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করবেন’।২৩ যে ব্যক্তি ছালাতে স্বশব্দে আমীন বলবে এবং তা ফেরেশতাদের আমীনের সাথে মিলে যাবে তা পূর্বের পাপ সমূহ ক্ষমা করা হবে।২৪
সবচেযে বড় বিষয় হ’ল, এই সুন্নাতগুলো সমাজে চালু করতে শত শত হকবপন্থী আলেমের রক্ত প্রবাহিত হয়েছে। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হয়েছে, অন্ধ কারাগারে জীবন দিতে হয়েছে, দীপান্তরে কালাপানির ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে। যেমন বুকের উপর হাত বাঁধা, জোরে আমীন বলা, রাফঊল ইয়াদায়েন করা ইত্যাদি। আর সেই সুন্নাত সমূহকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা কত বড় অন্যায় তা ভাষায় প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই।
৫. সঠিক পদ্ধতিতে ছালাত আদায় করতে গিয়ে দেখার প্রয়োজন নেই যে কতজন লোক তা করছে, কোন মাযহাবে চালু আছে, কোন ইমাম কী বলেছেন বা আমল করেছেন কিংবা কোন দেশের লোক করছে আর কোন দেশের লোক করছে না :
আল্লাহ প্রেরিত সংবিধান চিরন্তন। যা নিজস্ব গতিতে চলমান। এই মহা সত্যকেই সর্বদা অাঁকড়ে ধরে থাকতে হবে একাকী হ’লেও। ইবরাহীম (আঃ) নানা যুলুম-অত্যাচার সহ্য করে একাই সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তাই তিনি বিশ্ব ইতিহাসে মহা সম্মানিত হয়েছেন(নাহল ১২০; বাক্বারাহ ১২৪)। সমগ্র জগতের বিদ্রোহী মানুষরা তার সম্মান ছিনিয়ে নিতে পারেনি। সংখ্যা কোন কাজে আসেনি। মূলকথা হ’ল- অহীর বিধান সংখ্যা, দেশ, অঞ্চল, বয়স, সময়, মেধা কোন কিছুকে তোয়াক্কা করে না। অনেকে বলতে চায় চার ইমামের পরে মুহাদ্দিছগণের জন্ম। সুতরাং ইমামদের কথাই গ্রহণযোগ্য। অথচ ছাহাবীরা সুন্নাতকে অগ্রাধিকার দিতে বয়স্ক ব্যক্তি উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মাত্র ৬/৭ বছরের বাচ্চাকে দিয়ে ছালাত পড়িয়ে নিয়েছেন।২৫ওমর (রাঃ) কনিষ্ঠ ছাহাবী আবু সাঈদ খুদরীর নিকট থেকে বাড়ীতে তিনবার সালাম দেওয়া সংক্রান্ত হাদীছের পক্ষে সাক্ষী গ্রহণ করেন। কারণ তিনি এই হাদীছ জানতেন না।২৬ অতএব মহা সত্যের উপর কোন কিছুর প্রাধান্য নেই। ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, ‘হক-এর অনুসারী দলই হল জামা‘আত যদি তুমি একাকী হও’।২৭ অতএব হকপন্থী ব্যক্তি একাকী হ’লেও সেটাই জান্নাতী দল।
৬. কোন দল বা মাযহাবী স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য কৌশল করে কিংবা অপব্যাখ্যা করে ইলাহী বিধানকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না :
উক্ত জঘন্য নীতির জয়জয়কার চলছে সহস্র বছর ধরে। একশ্রেণীর মানুষ অণু পরিমাণ জ্ঞান নিয়ে আল্লাহর জ্ঞানের উপর প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করছে। এই অপকৌশলের যে কী শাস্তি তা তারা ভুলে গেছে। মূল শরী‘আতকে উপেক্ষা করে দলীয় সিদ্ধান্ত ও মাযহাবী নীতি প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য থাকলে বানী ইসরাঈলদের মত তাদের উপর আল্লাহর গযব নেমে আসা স্বাভাবিক। দাঊদ (আঃ)-এর সময় তারা মহা সত্যকে না মেনে মিথ্যা কৌশলের আশ্রয় নেওয়ার কারণেই তারা বানর ও শূকরে পরিণত হয়েছিল এবং একই দিনে সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল (বাক্বারাহ ৬৫; মায়েদা ৬০)। পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের অপব্যাখ্যা করে মানুষকে যারা বিভ্রান্ত করবে তাদের পরিণাম এমনই হওয়া উচিত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, ‘কুরআন তোমার পক্ষে দলীল হ’তে পারে আবার বিপক্ষেও দলীল হ’তে পারে’।২৮ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের জানা উচিত যে, শারঈ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমি যাই করি এবং যে উদ্দেশ্যেই করি অন্তরের খবর আল্লাহ সবই জানেন (মুলক ১৩; আলে ইমরান ১১৯)
নিম্নে আমরা ওযূ থেকে শুরু করে ফরয ছালাতসহ অন্যান্য ছালাতে যে সমস্ত জাল-যঈফ হাদীছ ও ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে সেগুলো উল্লেখ করব এবং এর সাথে সঠিক বিষয় সম্পর্কেও আলোকপাত করব ইনশাআল্লাহ।

ইমাম আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-বুখারী, ছহীহ বুখারী (রিয়ায: মাকতাবাতু দারিস সালাম, ১৯৯৯ খৃঃ/১৪১৭ হিঃ), হা/৬৩১; ছহীহ বুখারী (করাচী ছাপা: ক্বাদীমী কুতুবখানা, আছাহহুল মাতাবে‘ ২য় প্রকাশ: ১৩৮১হিঃ/১৯৮১খৃঃ), ১ম খন্ড, পৃঃ ৮৮; মুহাম্মাদ ইবনু আব্দিল্লাহ আল-খত্বীব আত-তিবরীযী, মিশকাতুল মাছাবীহ, তাহক্বীক : শায়খ আলবানী (বৈরুত: আল-মাকতাবুল ইসলামী, ১৯৮৫/১৪০৫), হা/৬৮৩, ১/২১৫ পৃঃ; মাওলানা নূর মোহাম্মদ আজমী, বঙ্গানুবাদ মিশকাত (ঢাকা: এমদাদিয় পুস্তকালয়, আগস্ট ২০০২), হা/৬৩২, ২/২০৮ পৃঃ; ছহীহ বুখারী হা/৬০০৮, ৭২৪৬
আবুল ক্বাসেম সুলায়মান ইবনু আহমাদ আত-তাবারাণী, আল-মু‘জামুল আওসাত্ব (কায়রো: দারুল হারামাইন, ১৪১৫), হা/১৮৫৯; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদীছ আছ-ছহীহাহ হা/১৩৫৮
ছহীহ বুখারী হা/৭৫৭, ১/১০৪-১০৫; মিশকাত হা/৭৯০; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৭৩৪, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৫০
ছহীহ বুখারী হা/৭৯১; মিশকাত হা/৮৮৪; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৮২৪
ছহীহ সুনানে নাসাঈ, তাহক্বীক্ব : মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, (রিয়ায : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, তাবি), হা/১৩১২, ১/১৪৭ পৃঃ; ছহীহ ইবনে হিববান হা/১৮৯৪, সনদ ছহীহ
সূরা ইউসুফ ১০৮; নাজম ৩-৪; হা-ক্কাহ ৪৪-৪৬; ছহীহ বুখারী হা/৫৭৬৫, ২য় খন্ড, পৃঃ ৮৫৮, ‘চিকিৎসা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৮; আহমাদ ইবনু শু‘আইব আবু আব্দির রহমান আন-নাসাঈ, সুনানুন নাসাঈ আল-কুবরা (বৈরুত: দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৪১১/১৯৯১), হা/১১১৭৪, ৬/৩৪৩ পৃঃ; আব্দুল্লাহ ইবনু আব্দির রহমান আবু মুহাম্মাদ আদ-দারেমী, সুনানুদ দারেমী (বৈরুত: দারুল কিতাব আল-আরাবী, ১৪০৭ হিঃ), হা/২০২; সনদ হাসান, মিশকাত হা/১৬৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১৫৯, ১/১২৩ পৃঃ; ছহীহ বুখারী হা/১৪৬৫, ১ম খন্ড, পৃঃ ১৯৮, ‘যাকাত’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৪৬; মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫১৬২
৭ ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুআক্কেঈন আন রাবিবল আলামীন (বৈরুতঃ দারুল কুতুব আল ইলমিয়াহ, ১৯৯৯৩/১৪১৪), ২য় খন্ড, পৃঃ ৩০৯; ইবনু আবেদীন, হাশিয়া বাহরুর রায়েক্ব ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃঃ ২৯৩; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, ছিফাতু ছালাতিন নাবী (ছাঃ) মিনাত তাকবীরি ইলাত তাসলীম কাআন্নাকা তারাহু (রিয়ায: মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, ১৯৯১/১৪১১), পৃঃ ৪৬
আল-খুলাছা ফী আসবাবিল ইখতিলাফ, পৃঃ ১০৮; শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী, ইক্বদুল জীদ ফী আহকামিল ইজতিহাদ ওয়াত তাক্বলীদ (কায়রো: আল-মাতবাআতুস সালাফিয়াহ, ১৩৪৫হিঃ), পৃঃ ২৭
শারহু মুখতাছার খলীল লিল কারখী ২১/২১৩ পৃঃ; ইক্বদুল জীদ ফী আহকামিল ইজতিহাদ ওয়াত তাক্বলীদ, পৃঃ ২৮
১০. সূরা আন‘আম ১৪৪; আ‘রাফ ৩৩; হুজুরাত ৬; ছহীহ বুখারী হা/৫১৪৩ ও ৬০৬৪, ২/৮৯; ইমাম আবুল হুসাইন মুসলিম বিন হাজ্জাজ আল-কুশাইরী, ছহীহ মুসলিম (দেওবন্দ: আছাহহুল মাতাবে‘ ১৯৮৬), হা/৬৫৩৬, ২/৩১৬; মিশকাত হা/৫০২৮, পৃঃ ৪২৭
১১আব্দুল ওয়াহহাব শা‘রাণী, মীযানুল কুবরা (দিল্লীঃ ১২৮৬ হিঃ), ১ম খন্ড, পৃঃ ৩০
১২আলবানী, ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব (রিয়ায: মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, ২০০০/১৪২১), ১/৩৯, ভূমিকা দ্রঃ; আবু আব্দিল্লাহ আল-হাকিম, মা‘রেফাতু উলূমিল হাদীছ, পৃঃ ৬০
১৩ছহীহ মুসলিম, মুক্বাদ্দামাহ দ্রঃ, ১/১২ পৃঃ, ‘যা শুনবে তাই প্রচার করা নিষিদ্ধ’ অনুচ্ছেদ-৩; প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আল-খত্বীব, আস-সুন্নাহ ক্বাবলাত তাদবীন (রৈরুত: দারুল ফিকর, ১৯৮০/১৪০০), পৃঃ ২৩৭
১৪মুহাম্মাদ তাহের পাট্টানী, তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত (বৈরুত : দারুল এহইয়াইত তুরাছ আল-আরাবী, ১৯৯৫/১৪১৫), পৃঃ ৭; ড. ওমর ইবনু হাসান ফালাতাহ, আল-ওয়ায‘উ ফিল হাদীছ (দিমাষ্ক : মাকতাবাতুল গাযালী, ১৯৮১/১৪০১), ১ম খন্ড, পৃঃ ৩৩৩
১৫ছহীহ তিরমিযী হা/২৪৯৯, ২/৭৬ পৃঃ; মিশকাত হা/২৩৪১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/২২৩২, ৫/১০৪ পৃঃ
১৬মুত্তাফাক্ব আলাইহ, বুখারী হা/১২২৯; মিশকাত হা/১০১৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৯৫১, ৩/২৫ পৃঃ
১৭ইবনুল ক্বাইয়িম, ই‘লামুল মুআক্কেঈন ২/২৭০-২৭২
১৮آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِيْ أَنْزَلْتَ وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ قَالَ الْبَرَاءُ فَقُلْتُ وَبِرَسُوْلِكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ قَالَ فَطَعَنَ بِيَدِهِ فِيْ صَدْرِيْ ثُمَّ قَالَ وَنَبِيِّكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ -তিরমিযী হা/৩৩৯৪, ২/১৭৬-১৭৭, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়, ‘ঘুমানোর জন্য বিছানায় গিয়ে দো‘আ পড়া’ অনুচ্ছেদ; ছহীহ বুখারী হা/৬৩১১, ‘দো‘আ সমূহ’ অধ্যায়-৮৩, অনুচ্ছেদ-৬; ছহীহ মুসলিম হা/৭০৫৭।
১৯আহমাদ হা/৯৭৯০, সনদ ছহীহ, মিশকাত হা/৮১১; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৭৫৫
২০خَرَجَ يَوْمًا فَقَامَ حَتَّى كَادَ يُكَبِّرُ فَرَأَى رَجُلاً بَادِيًا صَدْرُهُ مِنَ الصَّفِّ فَقَالَ عِبَادَ اللَّهِ لَتُسَوُّنَّ صُفُوْفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللَّهُ بَيْنَ وُجُوْهِكُمْ -ছহীহ মুসলিম হা/১০০৭, ১/৮২ পৃঃ, ‘ছালাতে কাতার সোজা করা’ অনুচ্ছেদ; মিশকাত হা/১০৮৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/১০১৭
২১عَنْ جَابِرٍ قَالَ مَرَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِرَجُلٍ وَهُوَ يُصَلِّي وَقَدْ وَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى الْيُمْنَى فَانْتَزَعَهَا وَوَضَعَ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى -মুসনাদে আহমাদ হা/১৫১৩১; ছহীহ আবুদাঊদ হা/৭৫৫, সনদ হাসান
২২إِنَّ مِنْ وَرَائِكُمْ زَمَانَ صَبْرٍ لِلمُتَمَسِّكِ فِيْهِ أَجْرُ خَمْسِيْنَ شَهِيدًا فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ اللَّهِ، مِنَّا أَوْ مِنْهُمْ؟ قَالَ مِنْكُمْ. -তাবারাণী, আল-মু‘জামুল কাবীর হা/১০২৪০; মুহাম্মাদ নাছিরুদ্দীন আলবানী, সিলসিলাতুল আহাদীছ আছ-ছহীহাহ ওয়া শাইয়ুন মিন ফিক্বহিহা ওয়া ফাওয়াইদিহা (বৈরুতঃ আল-মাকতাবাতুল ইসলামী, ১৯৮৫/১৪০৫), হা/৪৯৪; সনদ ছহীহ, ছহীহুল জামে‘ হা/২২৩৪
২৩مَنْ سَدَّ فَرْجَةً فِيْ صَفٍّ رَفَعَهُ اللهُ بِهَا دَرَجَةً وَبَنَى لَهُ بَيْتًا فِي الْجَنَّةِ -তাবারাণী, আওসাত্ব হা/৫৭৯৭; সনদ ছহীহ, সিলসিলা ছহীহাহ হা/১৮৯২
২৪ছহীহ বুখারী, তা‘লীক্ব ১/১০৭ পৃঃ, হা/৭৮০ ও ৭৮২; ছহীহ মুসলিম হা/৯৪০, ৯৪২ ১/১৭৬
২৫ছহীহ বুখারী হা/৪৩০২, ‘মাগাযী’ অধ্যায়-৬৭, অনুচ্ছেদ-৫০, ২/৬১৫-৬১৬; মিশকাত হা/১১২৬
২৬ছহীহ মুসলিম হা/৫৬২৬, ২/২১০ পৃঃ, ‘আদব’ অধ্যায়, ‘অনুমতি’ অনুচ্ছেদ-৭; মিশকাত হা/৪৬৬৭; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৪৪৬২ ৯/১৯ পৃঃ
২৭إِنَّ الْجَمَاعَةَ مَا وَافَقَ الْحَقَّ وَ إِنْ كُنْتَ وَحْدَكَ -ইবনু আসাকির, তারীখু দিমাষ্ক ১৩/৩২২ পৃঃ; সনদ ছহীহ, আলবানী, মিশকাত হা/১৭৩-এর টীকা দ্রঃ, ১/৬১ পৃঃ; ইমাম লালকাঈ, শারহু উছূলিল ই‘তিক্বাদ ১/১০৮ পৃঃ
২৮ছহীহ মুসলিম হা/৫৫৬, ১/১১৮ পৃঃ ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১

জাল ও য’ঈফ হাদীসঃ ১–১০

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

প্রিয় বন্ধুগণ, আমরা জানি, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর একটি হাদীস এক একটি আইন, একটি সংবিধান ও একটি নীতি। যার সূত্র ধরে যুগে যুগে মানব জাতি তাদের করণীয় ও বর্জনীয় নির্ধারণ করবে। এর মাধ্যমে মানবতা তাদের জীবন চলার দিক নির্দেশনা খুঁজে নিবে। তাই যে কোন হাদীস গ্রহণ করার আগে তা বিশুদ্ধ সূত্রে প্রমাণিত হওয়া অপরিহার্য। যার কারণে যুগে যুগে মুহাদ্দেসীনগণ হাদীসের বিশুদ্ধতা অনুসন্ধানের নিমিত্তে হাদীসের বর্ণনাকারী, বর্ণনা সূত্র এবং হাদীসের মূল বক্তব্যের মাঝে কোন রূপ সংযোজন-বিয়োজন কিম্বা পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে কি না তা অতি সূক্ষ্ম ভাবে চুল চেরা বিশ্লেষণ করে হাদীসটির প্রতি সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন যে, এটি আদৌ হাদীস কি না অথবা তা সহীহ না জঈফ। এটি অত্যন্ত জটির একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু আল্লাহর সাহায্যে তারা এ কাজটি অভূতপূর্ব সাফল্যের সাথে  সম্পন্ন করে গেছেন। সুতরাং কেউ ইচ্ছা করলেই কোন কথাকে হাদীস বলে চালিয়ে দিতে পারবে না।

আমরা দেখব, আমাদের সমাজে অনেক কথা হাদীস হিসেবে প্রচলিত কিন্তু বাস্তবে সেগুলো হাদীস নয় অন্য কথায় সেগুলো জাল হাদীস। এ সম্পর্কে মুসলমান ভাইদেরকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে এখানে কতিপয় জাল ও জঈফ হাদীস সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আসুন, আমরা সেগুলো দেখি এবং জানার চেষ্টা করি।

১) “দ্বীন (ধর্ম)  হচ্ছে বিবেক, যার দ্বীন নেই তার কোন বিবেক নেই।” 

হাদীসটি বাতিল

সূত্রঃ “ আল-কুনা ”  এবং  “ আল-কুনা ওয়াল  আসমা ”  গ্রন্থে আবূ মালেক বিশর ইবনু গালিব সূত্রে যুহরী হতে বর্ণিত।

বাতিল বলেছেনঃ ইমাম নাসাঈ (রহঃ) , হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) ও আল্লামা আলবানী (রহঃ) ।

আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ)  বলেনঃ “বিবেক সম্পর্কে বর্ণিত সকল হাদীস মিথ্যা।” ( আল-মানার; পৃঃ ২৫ )

২) “পুরুষদের ইচ্ছা ( মনোবল )  পর্বতমালাকে স্থানচ্যূত করতে পারে।”

এটি হাদীস নয়।

বাতিল বলেছেনঃ ইসমাঈল আজলুনী (রহঃ) এর মন্তব্য–“এটি যে হাদীস তা সম্পর্কে অবহিত হতে পারি নি।” (কাশফুল খাফা)।  আল্লামা আলবানী (রহঃ) ও হাদীসটিকে বাতিল বলে আখ্যায়িত করেছেন ।

৩) “মসজিদের মধ্যে কথোপকথন পূণ্যগুলোকে খেয়ে ফেলে যেমনভাবে চতুষ্পদ জন্তুগুলো ঘাস খেয়ে ফেলে।”

হাদীসটি ভিত্তিহীন।

সূত্রঃ “ ইহইয়াউ উলুমিদ্দীন” (১/১৩৬)

বাতিল বলেছেনঃ হাফিয ইরাকী (রহঃ) , হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ), আব্দুল ওয়াহাব সুবকী (রহঃ) , আল্লামা আলবানী (রহঃ)

৪) “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।”

হাদীসটি জাল।

জাল বলেছেনঃ ইমাম সাগানী (রহঃ)  ও অন্যান্য ইমামগণ ।

৫) “যে ব্যক্তি নিজেকে চিনেছে , সে তার প্রভুকে চিনতে সক্ষম হয়েছে।”

হাদীসটির কোন ভিত্তি নেই।

বাতিল বলেছেনঃ  ইমাম নববী (রহঃ), ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহঃ) হাফিয সাখাবী (রহঃ), ইমাম সূয়ুতী (রহঃ), শাইখ আল-কারী (রহঃ)।

ফিরোযাবাদী (রহঃ) বলেনঃ  যদিও অধিকাংশ লোক এটিকে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  এর হাদীস বলে চালাচ্ছেন, তবুও এটি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  এর হাদীসের অন্তর্ভুক্ত নয়। এর ভিত্তিই সহীহ নয়। এটি ইসরাইলীদের বর্ণনায় বর্ণিত ।

৬) “নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ জুম’আর দিবসে পাগড়ী ধারীদের প্রতি দয়া করেন।

হাদীসটি জাল

সূত্রঃ “আল-মু’জামাল কাবীর” এবং “আল-হিলইয়াহ” (৫/১৮৯-১৯০)  গ্রন্থে  আলা ইবনু আমর হানাফী সূত্রে আইউব ইবনু মুদরেক হতে বর্ণিত।

জাল বলেছেনঃ ইমাম ইবনুল জাওযী (রহঃ), হাফিয ইবনে হাজার (রহঃ), ইমাম উকাইলী (রহঃ) , ইমাম ইবনু আদী (রহঃ), ইমাম আল-আলবানী (রহঃ) ।

৭) “আমি আরবী ভাষী, কুরআন আরবী ভাষায় এবং জান্নাতীদের ভাষা আরবী।”

হাদীসটি জাল।

সূত্রঃ “ আল- মু’জামুল আওসাত”।  (২/২৮৫,১/ ৯৩০১ )।

হাদীসের রাবীর (আব্দুল আযীয) সমালোচনা করেছেনঃ  ইমাম বুখারী (রহঃ), ইমাম হায়সামী (রহঃ), ইমাম সূয়ুতী (রহঃ), হাফিয ইরাকী (রহঃ), ইমাম ইবনু মাঈন (রহঃ), ইমাম ইবনু আররাক (রহঃ) , ইমাম ইবনু আদী (রহঃ), আল্লামা আল-আলবানী (রহঃ) ।

৮) “পাগড়ীসহ সালাত পড়া দশ হাজার ভাল কর্মের সমতুল্য।”

হাদীসটি জাল।

সূত্রঃ “যায়লুল আহাদীসিল মাওযূ’ আহ” (পৃঃ ১১১ )  গ্রন্থে আবান নামক এক ব্যক্তি হতে বর্ণিত।

জাল বলেছেনঃ  ইমাম সাখাবী (রহঃ), হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ), ইমাম মানূফী (রহঃ), শাইখ আল- কারী (রহঃ) ।

ইমাম সুয়ূতী (রহঃ ) বর্ণনাকারী আবান সম্পর্কে বলেনঃ আবান মিথ্যার দোষে দোষী। ইমাম ইবনুল আররাক (রহঃ) “তানযীহুশ শরীয়াহ” (২/২৫৭) গ্রন্থেও একই মন্তব্য করেছেন।

৯) “মুমিনের উচ্ছিষ্টে রয়েছে  আরোগ্য।”

হাদীসটির কোন ভিত্তি নেই।

ভিত্তি নেই বলেছেনঃ  শাইখ আহমাদ আল গাযাযী (রহঃ), শাইখ আজলূনী (রহঃ) ।

শাইখ আহমাদ আল গাযাযী (রহঃ) বলেনঃ এটি কোন হাদীস নয়।  (আল-যাদ্দুল হাসীস )

১০) “যে ব্যক্তি তর্জনী অংগুলি দু’টির ভিতরের অংশ দ্বারা মুয়ায্‌যিন কর্তৃক আশ্‌-হাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ বলার সময় দু’চোখ মাসেহ করবে; তার জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুপারিশ অপরিহার্য হয়ে যাবে।”

হাদীসটি সহীহ নয়।

সুত্রঃ  এটি  “মুসনাদুল ফিরদাউস”  গ্রন্থে রয়েছে ।

সহীহ নয় বলেছেনঃ ইমাম ইবনু তাহির (রহঃ) (আত-তাযকীরাহ), ইমাম শওকানী (রহঃ)  (আহাদিসুল মাওযূ’আহ), ইমাম সাখাবী (রহঃ)  (মাকাসিদুল হাসানা) ।

জাল ও য’ঈফ হাদীসঃ১১–১৫

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।


১১) “যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা আল-ওয়াকে’য়াহ পাঠ করবে, তাকে কখনও অভাব (ক্ষুধা) গ্রাস করবে না।”

হাদীসটি দুর্বল।

সূত্রঃ হাদীসটি হারিস ইবনু আবী উসামা তার “মুসনাদ” গ্রন্থে (১৭৮), ইবনুস সুন্নী “আমালুল ইয়াউম ওয়াল লাইলাহ” গ্রন্থে (৬৭৪), ইবনু লাল তার “হাদীস” গ্রন্থে (১/১১৬), ইবনু বিশরান “আল- আমালী” গ্রন্থে  (২০/৩৮/১)  বর্ণনা করেছেন আবূ শুযা’ সূত্রে আবূ তায়বাহ হতে।

দুর্বল বলেছেনঃ ইমাম আহমাদ (রহঃ), আবূ হাতিম (রহঃ), ইবনু আবী হাতিম (রহঃ), দারা কুতুনী (রহঃ), ইমাম বায়হাক্বী (রহঃ)।

  •  ইমাম মানাবী (রহঃ) বলেনঃ হাদীসটি মুনকার। (আত্‌- তায়সীর)
  •  হাদীসটির রাবীদের সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (রহঃ) বলেনঃ আবূ শুযাকে চেনা যায় না এবং আবূ তায়বাহ মাজহূল।
  •  ইমাম যায়লাঈ ( রহঃ ) হাদীসটি দোষণীয় হওয়ার কারণ উল্লেখ করেছেনঃ-
  1. এটির সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে ।
  2. হাদীসটির মতনে (ভাষায়) দুর্বোধ্যতা রয়েছে।
  3.  হাদীসটির বর্ণনাকারীগণ দুর্বল।
  4.  এছাড়া ইযতিরাব রয়েছে।

২) “যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা আল-ওয়াকেয়াহ পাঠ করবে; তাকে কখনও অভাব গ্রাস করবে না। যে ব্যক্তি প্রতি রাতে লা-উকসিমু বি-ইয়াওমিল ক্বিয়ামাহ পাঠ করবে; সে কিয়ামত দিবসে আল্লাহর সাথে এমতাবস্থায় মিলিত হবে যে, তার চেহারা পূর্ণিমা রাতের চাঁদের ন্যায় উজ্জ্বল থাকবে।”

হাদীসটি জাল।

সূত্রঃ এটি দায়লামী, আহমাদ ইবনু উমার ইয়ামানী সূত্রে নিজ সনদে বর্ণনা করেছেন।

হাদীসটি ইমাম সুয়ূতী (রহঃ) “যায়লুল আহাদীসুল মাওযূ’আহ” গ্রন্থে (১৭৭)  উল্লেখ করে বলেছেনঃ বর্ণনাকারী আহমাদ ইয়ামানী মিথ্যুক।

 ১৩) “আমি সে সময়েও নবী ছিলাম যখন আদম পানি এবং মাটির মাঝে ছিলেন।”

নিম্নের হাদীসটিও এটির ন্যায়ঃ–  “যখন আদম ছিলেন না, পানি ও মাটি ছিল না তখনও আমি নবী ছিলাম।”

হাদীস দু’ টি জাল।

জাল বলেছেনঃ শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ  (রহঃ) এবং ইমাম সুয়ূতী (রহঃ) সহ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের সকল মুহাদ্দীস।

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যাহ  (রহঃ)  “বাকরীর প্রতিবাদ”   গ্রন্থের মধ্যে (পৃষ্ঠাঃ ৯)  বলেছেনঃ “কুর’আন ও হাদীসের মধ্যে এমন কি সুস্থ বিবেকেও এটির কোন ভিত্তি নেই। কোন মুহাদ্দিসই এটি উল্লেখ করেননি। এটির অর্থও বাতিল। কারণ আদম ( আলাইহিস সালাম )  কখনও পানি এবং মাটির মাঝে ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন দেহ এবং রূহ এর মাঝে।”

১৪)  “চীন দেশে গিয়ে হলেও তোমরা জ্ঞান অন্বেষণ কর।”

হাদীসটি বাতিল।

সূত্রঃ এটি যেসব গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছেঃ “আখবারূ আসহাবান” (২/১০৬); “ আল-ফাওয়াইদ” (২/২৪১) ; “আল-আরবা’য়ীন” (২/১৫১) ; “আত্‌-তারিখ” (৯/৩৬৪) ; “কিতাবুল রেহালা” (১/২); “আল-মাদখাল” (২৪১/৩২৪) ; “আল-মুনতাকা” (১/২৮)। উপরের প্রত্যেকটি গ্রন্থে জাল হাদীসটি হাসান ইবনু আতিয়া সূত্রে  “আবূ আতিকা”  হতে বর্ণিত হয়েছে।

  • হাদীসটির বর্ণনাকারী “আবূ আতিকা” সম্পর্কে ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ তিনি মুনকারূল হাদীস।
  •  ইমাম নাসাঈ (রহঃ)  বলেনঃ তিনি নির্ভরযোগ্য নন।
  • ইমাম উকায়লী (রহঃ)  বলেনঃ তিনি নিতান্তই দুর্বল।
  • ইমাম আবূ হাতিম (রহঃ) বলেনঃ তিনি যাহেবুল হাদীস।
  • ইমাম ইবনুল জাওযী (রহঃ) ও ইমাম ইবনু হিব্বান ( রহঃ ) বলেনঃ হাদীসটি বাতিল।
  • ইমাম সুলায়মানী (রহঃ)  “আবূ আতিকাকে”  হাদীস জালকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
  • ইমাম সাখাবী (রহঃ) তার “মাকাসীদুল হাসানা” গ্রন্থে উপরোক্ত মত সমর্থন করেন।
  • ইমাম আহমাদ (রহঃ) এ হাদীসটিকে কঠোর ভাষায় ইনকার করেছেন।
  •  ইমাম সুয়ূতী (রহঃ)  “আল-লায়ালী ”  (১/১৯৩ ) গ্রন্থে বলেনঃ

হাদীসটির আরো দু’টি সূত্র রয়েছেঃ—

১) একটির সনদে রয়েছেন ইয়াকূব ইবনু ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আসকালনী।

এ ইয়াকূব সম্পর্কে ইমাম যাহাবী (রহঃ) বলেনঃ সে মিথ্যুক।

২) দ্বিতীয়টির সনদে রয়েছেন আহমাদ ইবনু আবদুল্লাহ যুওয়াইবারী।

যুওয়াইবারী হাদীস জালকারী।

১৫) “যে ব্যক্তি মাগরিবের পরে কথা বলার পূর্বেই ছয় রাকায়াত সালাত আদায় করবে; তা দ্বারা তার ৫০ বছরের গুণাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

হাদীসটি নিতান্তই দুর্বল।

সূত্রঃ এটি ইবনু নাসর “কিয়ামুল্লাহ” গ্রন্থে (পৃঃ ৩৩) মুহাম্মদ ইবনু গাযওয়ান দামেস্কীর সূত্রে বর্ণনা করেছেন।

হাদীসটি ইমাম ইবনু আবী হাতিম (রহঃ)  তার “আল-ইলাল”  গ্রন্থে এ সূত্রেই (১/১৭৮) উল্লেখ করেছেন, অতঃপর বলেছেনঃ—

ইমাম আবূ যুর’য়াহ (রহঃ) বলেনঃ তোমরা এ হাদীসটিকে পরিহার কর। কারণ এটি বানোয়াট হাদীসের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। মুহাম্মদ ইবনু গাযওয়ান দামেস্কী মুনকারুল হাদীস।

ফিকাহ্‌ বিশারদদের মতে জায়েফ‌ হাদিস যদি কুর’আন পরিপন্থী না হয় তবে তা মানা যায়।

Leave a comment

Leave a comment